বাইতুররহমান গ্র্যান্ড মসজিদ ইন্দোনেশিয়ার ‘আচ্যে’ প্রদেশে অবস্থিত। ডিসেম্বর ২৬, ২০০৪ তারিখের ‘সুনামি’-এর আঘাতে এই প্রদেশের রাজধানী ‘বান্দা আচ্যে’তে প্রায় ১৭০,০০০ এর অধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করে এবং প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ গৃহহারা হয়।[1] [2] তবে ভয়ংকর এই সুনামির আঘাত থেকে আলোচ্য মসজিদটি রক্ষা পায় এবং শুধুমাত্র কিছু দেয়ালে ফাটল পরিলক্ষিত হয়।
অক্ষত থাকার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মসজিদটির মজবুদ কাঠামোকে উল্লেখ করলেও স্থানীয় ইসলাম ধর্মালম্বিরা এটি ‘অলৌকিক শক্তির হস্তক্ষেপে হয়েছে বলেই বিশ্বাস করে। এই ঘটনার পর ইন্দোনেশিয়ার ইসলাম ধর্মালম্বিদের কাছে এই মসজিদটি বিশেষ আকর্ষণের ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়ায়। যার ফলে প্রায় ১০ বছর পর ঐ মসজিদটিসহ সম্পূর্ণ এলাকাটি পুনর্নির্মাণ কাজ দ্রুত করা সম্ভব হয়েছে। স্থানীয়রা তাদের অনিয়মিত ধর্মচর্চাকে এই সুনামির জন্য দায়ী বলে বিশ্বাস করে এবং এই দুর্যোগের পর এই প্রদেশের মানুষ তুলনামূলক অধিক ধার্মিক হয়ে পড়ে। যা পরবর্তীতে এই প্রদেশকে ইন্দোনেশিয়ার একমাত্র ‘শরিয়া আইন ভিত্তিক’ অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

AP Photo/Eugene Hoshiko
১৮৮১ সালে মসজিদটি ডাচ উপনিবেশকারীরা নির্মাণ করে। স্থাপত্য বিশেষজ্ঞদের মতে ইউরোপিয়ানদের মজবুদ নির্মাণ কৌশল মসজিদটিকে এমন দুর্যোগ মোকাবেলা করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। [3] তারা বলেন, মসজিদ বা চার্চ অধিকাংশ সময় জনকল্যাণের জন্য তৈরি হওয়ায় এতে স্বাভাবিকভাবেই নির্মাতারা ভেজাল উপকরণ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকে এবং নির্মাণের কাঁচামালগুলো তুলনামূলক নিখাদ হয়। [4]
এখানে উল্লেখ্য, এলাকাটিতে মসজিদগুলো ছাড়া আশেপাশের সকল বসতি পূর্বে মূলত অস্থায়ী নিম্নমানের কাঠামো দিয়ে তৈরি করা ছিল। সুনামিতে বিশেষ এই মসজিদটি রক্ষা পেলেও প্রাকৃতিক দূর্যোগপ্রবণ এই প্রদেশে বিভিন্ন সময় একাধিক দুর্যোগে মসজিদসহ অসংখ্য কাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। [5]