অনুসন্ধান

প্রথম প্রকাশ:

ঔষধের বিরূপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে ২০১৫ সালে প্যারাসিটামল, পায়োগ্লিটাজন ও রসিগ্লিটাজন জাতীয় কয়েকটি ঔষধের নিবন্ধন বাতিল করে বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ)। ১৩ আগস্ট, ২০১৫ তারিখে ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির ২৪৪ তম সভায় বেক্সিমকো ফার্মার ‘নাপা সফট’ ট্যাবলেট, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ‘এইস সফট’ ট্যাবলেট সহ বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদিত ৫১টি ঔষধ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অধিদপ্তরটি।

ব্যথা, জ্বালা-পোড়া ও জ্বরের প্রতিষেধক হিসেবে বাজারে বহুল প্রচলিত সাধারণ ‘নাপা (প্যারাসিটামল ৫০০ মিলিগ্রাম)’ ও ‘এইস (প্যারাসিটামল ৫০০ মিলিগ্রাম)’ ঔষধগুলো এই নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত নয়। ‘প্যারাসিটামল ৫০০ মিলিগ্রাম’ ও ‘ডিএল মেথিওনিন ১০০ মিলিগ্রাম’ কম্বিনেশনে উৎপাদিত ‘নাপা সফট’ বা ‘এইস সফট’ জাতীয় ঔষধের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে।

২০১৫ সালে এই নিষেধাজ্ঞার পর থেকে শুরু করে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা, নিউজ পোর্টাল ও বেনামী ওয়েবসাইটে ভুল শিরোনামে এই সংবাদটি প্রচার করা হয়। যাতে বলা হয়, নাপা ও এইস বহুল সেবনীয় এই ঔষধগুলোর নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। দৈনিক যুগান্তর এর মত স্বনামধন্য পত্রিকায়ও রিপোর্টটি ভুল শিরোনামে প্রকাশ করা হয়। এরপর সময় সময় বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল ২০১৫ সালের এই খবরটি কপি-পেস্ট করে প্রচার করে। যারই ধারাবাহিকতায় ঘটনাটির প্রায় ২ বছর পর ‘একুশের বাংলাদেশ’ নামক একটি পোর্টাল জুলাই ২৫, ২০১৭ তারিখে, যখন সারা দেশে চিকুনঙ্গুনিয়া ও ভাইরাল জ্বরের প্রকট হওয়ায় এই ঔষধগুলোর চাহিদাও ব্যাপক, তখন খবরটি প্রকাশ করলে তা আবার ভাইরাল হয়ে যায়। উল্লেখ্য, পোর্টালটির ফেইসবুক ফলোয়ার সংখ্যা ২২ লক্ষাধিক এবং পেইজটি ভেরিফাইড।

‘নাপা সফট’ ও ‘এইস সফট’ বাতিল করার কারণ

অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যেহেতু আন্তর্জাতিকভাবে প্যারাসিটামলের এই বিশেষ কম্বিনেশনের ওষুধগুলো ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত করে বাতিল করা হয়েছে, তাই বাংলাদেশেও ওষুধগুলো বাতিল করা হয়।

যেসব কারণে প্যারাসিটামল এর সাথে মেথিওনিনের এই বিশেষ ফর্ম বাতিল করা হয়―

  • এই ঔষধের মূল উদ্ভাবক ব্রিটিশ একটি কোম্পানি বিভিন্ন জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে এই কম্বিনেশন পদটিতে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
  • মেথিওনিনের উপস্থিতির কারণে ঔষধটি সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে হৃদরোগ, ক্যান্সার, হেপটিক এসেফালোপ্যাথি, ব্রেন ড্যামেজ, এসিডোসিসের ঝুঁকি তৈরি হয়।
  • ১২ বছরের নিচের কোনো শিশুর জন্য মেথিওনিন সুপারিশকৃত না থাকায় এটি অবাধে ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ।
  • এ পদটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) এবং ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা পণ্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (এমএইচআর) কর্তৃক অনুমোদিত নয়।