তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান এর ছবি ও নাম ব্যবহার করে কিছু ফেইসবুক পেইজ ও তথাকথিত নিউজ পোর্টাল প্রায় সময়ই মুসলমানদের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রসঙ্গে পোস্ট প্রচার করে থাকে। এসব পোস্টের অনেকগুলোতেই বিভিন্ন উদ্ধত ও বিপ্লবী বক্তব্য উল্লেখ করা হয়, যেসব মূলত ভিত্তিহীন ও অপ্রমাণিত। এরই ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর চলমান বিপর্যয়ে নানান সময় তুরস্ক বা এরদোয়ানের ‘সামরিক’ হস্তক্ষেপের দাবী ও হুশিয়ারি প্রচার করে থেকে এসব মিডিয়াগুলো।
বলার অপেক্ষা রাখে না, জাতিসংঘ ব্যর্থ হলে তুরস্ক সেনাবাহিনী পাঠানোর হুশিয়ারি দেওয়ার দাবীটিও ভিত্তিহীন। তুরস্ক থেকে এমন হুমকি দেওয়া হয়ে থাকলে তা প্রধান শিরোনাম হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও, এমন কোন হুমকি প্রদানের ভিত্তি কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় নি। ইতিপূর্বে তিব্বত-চিনের দ্বন্দ্বের বিভিন্ন ভুল ছবি সংযুক্ত করে তুরস্কে ‘বৌদ্ধদের গ্রেফতার করছে এরদোয়ান’ এমন মিথ্যা দাবীও করা হয়েছিল।
কোন এক অজানা কারণে এসব মিডিয়াগুলো সংঘবদ্ধভাবে এরদোয়ানকে ‘মুসলিম জাহানের সুলতান’ কিংবা রক্ষক হিসেবে প্রতীয়মান করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইউটিউবে গুজবের অন্যতম প্রধান উৎস SKTV নামক আরেকটি চ্যানেল দাবী করে যে ইরানের সাথে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে রোহিঙ্গা বিপর্যয়ের সমাধান করার ব্যাপারে তুরস্ক কথা বলছে। এছাড়াও বিভ্রান্তিকর শিরোনাম ও ছবি দিয়ে এই ধরণের ইউটিউব চ্যানেলগুলো ‘যুদ্ধের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুতি নিচ্ছে’ এমন সংবাদও প্রচার করছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র প্রধানদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় মিয়ানমারে চলমান গণহত্যার ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়েছেন এবং এই বিপর্যয় বন্ধে সবার যথাযথ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছে – এটি তুরস্ক মিডিয়াগুলো থেকে জানা যায়।[1] রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের সহায়তা প্রদানের আশ্বাসও তুরস্ক দিয়েছে বলে বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে জানা যায়।[2] এছাড়াও এরদোয়ান মিয়ানমারের নেতা আন সান সু কি-এর সাথে এই বিষয় ফোনালাপ করেছেন বলেও খবর পাওয়া যায়।[3] কিন্তু এসব সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকি দেওয়ার দাবী সম্পূর্ণ বানোয়াট। যা বিভিন্ন ‘যুদ্ধ ও দাঙ্গাবাজ’ কুচক্রের কল্পনাপ্রসূত।