গুজবের উৎপত্তি
আগস্টের ২০ তারিখে Songrami71 নামক একটি বেনামী নিউজ পোর্টাল থেকে “বিসিবি না চাইলেও বিদায় জানিয়ে দিলেন সাকিব” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ ভিত্তিক খেলাধুলা বিষয়ক একাধিক বানামী ফেসবুক পেইজ থেকে এই সংবাদের লিংক শেয়ার করা হয়। Songrami71-এ প্রকাশিত সংবাদটিতে প্রায় সাড়ে ৭ হাজারের মতো লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার পায়।
পরবর্তীতে আরও একাধিক নিউজ পোর্টাল সংবাদটির শিরোনাম ও লেখা হুবহু কপি-পেস্ট করে প্রকাশ করে।
সত্যতা যাচাই
সংবাদের ভিতরের লেখায় দেখা যায় সেখানে বাংলাদেশের ক্রিকেট টিমের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ার নিয়ে কিছু বক্তব্য রয়েছে। তবে এই লেখা থেকে এটি স্পষ্ট না যে কাকে বিদায় জানিয়ে দিয়েছেন সাকিব।
সংবাদের ভিতরের লেখাগুলো খোঁজ করলে সেটির হুবহু মিল পাওয়া যায় ঠিক একদিন আগে, আগস্ট ১৯ তারিখে, দৈনিক যুগান্তর সহ আরও কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সাথে; যার কয়েকটির শিরোনাম হচ্ছে, “কত দিন খেলবেন, জানালেন সাকিব”, “ক্যারিয়ারের কবে ইতি টানবেন তা জানালেন সাকিব!”।
আলোচ্য শিরোনামটি আরও একটু খোঁজ করলে সেটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় ৬ মাস পূর্বের একটি সংবাদে।
ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২১ তারিখে প্রকাশিত “বিসিবি না চাইলেও বিদায় জানিয়ে দিলেন সাকিব” শিরোনামের সংবাদটি প্রকাশিত হয় Sportshour24 নামক একটি নিউজ পোর্টালে। এই সংবাদে উল্লেখ করা হয়—
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শেষে আগামী মাসের শেষের দিকে নিউজিল্যান্ড সফরে যাবে বাংলাদেশ দল।
তবে সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে নিউজিল্যান্ড সফর থেকে ছুটি চেয়েছেন সাকিব। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ঢাকা টেস্টে সাকিবের না থাকার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন তিনি।
অর্থাৎ, এই সংবাদে বিদায় মানে এই বছর মার্চে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজ ২০২১-এ সাকিব আল হাসান এর অংশগ্রহণ না করানোকে বুঝানো হয়েছে।
এছাড়াও একই শিরোনামে আরও কিছু নিউজপোর্টাল সংবাদগুলো কপি-পেস্ট করে সংবাদ হিসেবে শেয়ার করে। তবে অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে এবারও এই একই নিউজপোর্টালটি একই শিরোনামে সাকিবের ক্যারিয়ার বিষয়ক এই আলাপচারিতাটি প্রকাশ করে।
তবে এই সংবাদের শিরোনাম হুবহু ব্যবহার করলেও আলোচ্য কপি-পেস্ট করা সংবাদের প্রতিবেদনে বিসিবির কোনো উল্লেখ নেই। তাই ধরে নেওয়া যায়, শুধুমাত্র ক্লিকবেট তথা বিভ্রান্তিকর শিরোনামের মাধ্যমে ট্রাফিক ও এঙ্গেইজমেন্ট পাওয়ার জন্যই এরকম শিরোনাম ব্যবহার করা হয়েছে; যার সাথে মূল সংবাদের কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায় না।