প্রচলিত একটি ধারনা হলো, ডিমের সাদা অংশ প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন ও কোলাজেন সমৃদ্ধ হওয়ায় তা পুড়ে যাওয়া স্থানে ফোস্কা পড়া প্রতিরোধ করে এবং একটি সংক্রমণরোধী স্তর তৈরি করে। এমনকি ডিমের সাদা অংশ ত্বকের পুড়ে যাওয়া টিস্যু পুনর্গঠনে সাহায্য করে বলেও ধারনা রয়েছে। এছাড়া এটিও বলা হয়, পোড়া জায়গায় সাথে সাথে পানি বা অন্য কিছু না লাগিয়ে সবার আগে ডিমের সাদা অংশ লাগাতে হবে।
২০১০ সালে প্রকাশিত ‘ইমারজেন্সি নার্সিং’ বিষয়ক একটি জার্নালে ডিমের সাদা অংশ দিয়ে পোড়ার চিকিৎসা করতে বিশেষভাবে নিষেধ করা হয়েছে।[1] “First-Aid Home Treatment of Burns Among Children and Some Implications at Milas, Turkey,” শীর্ষক এই গবেষণায় পাওয়া যায় যে প্রায় শতকরা ৫০ ভাগ ক্ষেত্রে বাচ্চাদের পোড়ার প্রাথমিক চিকিৎসায় অনুপযুক্ত উপাদান যেমন টমেটো, পেস্ট, দই, ডিমের সাদা অংশ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
গবেষণায় বলা হয়, “এসব উপাদান ব্যবহারে কোন উপকার হয় এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি“। আরও বলা হয়, “পোড়া স্থানে এসব উপাদানের এরূপ ব্যবহার উল্টো ক্ষতিকর হওয়ার সুস্পষ্ট কারণ আছে। উদাহরণস্বরূপ, অণুজীবের (ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদির) কালচার বা বংশবৃদ্ধির জন্য ডিম একটি উপযোগী মাধ্যম হিসেবে কাজ করতে পারে।” অর্থাৎ, এর ফলে ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও কোনো কোনো ক্ষেত্রে আহত ব্যক্তির এসব উপাদানগুলোতে এলার্জিও থাকতে পারে।
পোড়ার সর্ব প্রাথমিক চিকিৎসা হচ্ছে ঠাণ্ডা পানি দেওয়া। আমেরিকার ‘ম্যাও ক্লিনিক’ অনুসারে, প্রথম কিংবা দ্বিতীয় মাত্রার পোড়ার ক্ষেত্রে ঠাণ্ডা পানি দিতে হবে যাতে পোড়ার তীব্রতা শীথিল হয়। অতঃপর পানি শুকিয়ে পরিষ্কার ব্যান্ডেজ দ্বারা ড্রেসিং করিয়ে নিতে হবে। তবে তৃতীয় ডিগ্রী পোড়ার ক্ষেত্রে ঠাণ্ডা পানি দিতে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা এতে রক্ত শিথিল হয়ে রক্তচাপ কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই এক্ষত্রে আহত ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নেওয়া জরুরী।[2]