অনুসন্ধান

প্রথম প্রকাশ:

এটি মূলত ২০১৪ সালে প্রচারিত একটি বার্তার সংস্করণ। যাতে দাবী করা হয় ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ সম্পূর্ণ ৭৪ মিনিটের ভিডিওটি মুক্তি দেওয়া হয়েছে ইউটিউবে এবং যেহেতু ইউটিউব তা সরিয়ে নিতে অসম্মতি জানাচ্ছে, তাই সবাইকে ইউটিউব ও এর মালিক গুগলের ওয়েবসাইট ৩দিনের জন্য প্রত্যাহারের আহ্বান করা হয়।

‘নাকুলা বাসিলি নাকুলা’ (ছদ্মনাম ‘স্যাম বাসিলি’) নামক মিসরীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক জুলাই ২, ২০১২ সালে ইউটিউবে ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ নামক একটি চলচ্চিত্রের ১৪ মিনিটের ট্রেইলার ‘দি রিয়েল লাইফ অব মুহাম্মদ’ আপলোড করে, যাতে ইসলাম ধর্ম ও এর প্রবর্তককে অপমানজকভাবে প্রদর্শন করা হয়। সারা বিশ্বের ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা এই ভিডিওটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এর ফলশ্রুতিতে, প্রায় ৫০ জন ব্যক্তি নিহত ও শত শত মানুষ আহত হয় হয়। পরবর্তীতে সেই বছর সেপ্টেম্বরে ভিডিওটি আরবি ভাষান্তর করে নতুন করে আপলোড করা হয়।

এই প্রচারমূলক ট্রেইলারটি ছাড়া সম্পূর্ণ চলচ্চিত্রটি ইউটিউবে প্রকাশের কোন খবর বা প্রমাণ পাওয়া যায় নি। যদিও কিছু স্বার্থনেসী গোষ্ঠী এটিকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে এই চলচ্চিত্রটির নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ভিডিও আপলোড দেয়। ‘বাসিলি’ এপি এর সাথে একটি সাক্ষাতকারে, জুন ২৩, ২০১২ তারিখে (ইউটিউবে ট্রেইলারটি প্রকাশের পূর্বে) চলচ্চিত্রটি ‘The Innocence of Bin Laden’ নামে প্রদর্শন করেছেন বলে দাবী করে। যাতে সর্বমোট ১০ জন দর্শক উপস্থিত ছিল। এছাড়া বিভিন্নভাবে এটি প্রদর্শনের কথা হলেও সেটি আর করা হয় নি।

এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ কাজ শুরু হয় জুলাই ২০১১ সালে ‘ডেসার্ট ওয়ারিয়র’ (Desert Warrior) নামে। অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের এই চলচ্চিত্রটির সাথে ইসলাম কিংবা এই ধর্মের প্রবর্তকের সাথে কোন সম্পর্কের ব্যাপারে জানানো হয় নি। এমনকি মূল স্ক্রিপ্টও এই বিষয়ে ছিল না। কিন্তু পোস্ট প্রোডাকশনে চলচ্চিত্রটির নাম, স্ক্রিপ্ট ও প্রেক্ষাপট ডাবিং করে বদলীয়ে দেওয়া হয়।

ইউটিউবে ট্রেইলারটি প্রকাশের পর তদন্ত করে ‘স্যাম বাসিলি’ নামক কোন চলচ্চিত্রকারের সন্ধান পাওয়া যায় নি। এমনকি এই নামে ইসরাইলের কোন নাগরিকের পরিচয় মিলে নি। অবশেষে সেপ্টেম্বর ২০১২-তে ‘নাকুলা বাসিলি নাকুলা’ নামক ৫৫ বছরের একজন ব্যক্তিকে ‘স্যাম বাসিলি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ইতিপূর্বে বাসিলিকে ব্যাংক জালিয়াতি ও নেশাজাত দ্রব্য বহনের জন্য কারাদন্ড দেওয়া হয়েছিলো। এই ভিডিওটির জন্য তাকে ১ বছর কারাদণ্ড ও কারাদণ্ড পরবর্তী ৪ বছরের জন্য প্রবেশনে মুক্তি দেওয়া হয়।

পাদটীকা

মন্তব্য